ইসলামী সমাজ বিপ্লবের ধারা ও সাইয়্যিদ কুতুব শহীদ (রহঃ)

সাইয়্যিদ কুতুব শহীদ (রহঃ) এর যখন ফাঁসির হুকুম হলো তখন তাঁকে বলা হল যদি তিনি প্রেসিডেন্ট জামাল নাসেরের কাছে প্রাণভিক্ষা চান তাহলে তাঁকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে।

উত্তরে কুতুব শহীদ(রহঃ)বললেন, 'মজলুম হয়ে জালিমের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে এর চাইতে শাহাদতের মৃত্যুই অনেক শ্রেয়, এর মাধ্যমে আমি আমার মুনিবের সাক্ষাৎ লাভ করতে পারব। উত্তর শুনে জামাল নাসের ক্ষিপ্ত হয়ে সাইয়েদ কুতুব শহীদের (রহঃ) সেলের ভিতর ক্ষুধার্ত পাগলা কুকুর ঢুকিয়ে দিল।
কিছুক্ষন পর জামাল নাসের একজনকে পাঠালো সাইয়েদের খোঁজ নিতে লোকটি সেলের সামনে এসে হতবাক হয়ে দেখলো যে সাইয়েদ কুতুব সিজদায় মগ্ন। আর ক্ষুধার্ত কুকুরটি পাশে বসে পাহারা দিচ্ছে ! ফাঁসির পূর্বের রাতে সাইয়্যিদ কুতুব (রহঃ) কে কালিমা পড়ানোর জন্য জেলের ইমামকে পাঠানো হলো। জেলের ইমাম এসে আল্লামা সায়্যিদ কুতুব (রহঃ) কে কালিমার তালকিন দেয়ার চেষ্টা করতে লাগলেন। তাকে দেখে সায়্যিদ কুতুব জিজ্ঞাসা করলেন আপনি কি জন্য এখানে এসেছেন? ইমাম বললেন, আমি আপনাকে কালিমা পড়াতে এসেছি। মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার আগে আসামীকে কালিমা পড়ানো আমার দায়িত্ব। সায়্যিদ কুতুব (রহঃ) বললেন, এই দায়িত্ব আপনাকে কে দিয়েছে? ইমাম বললেন, সরকার দিয়েছে।
সাইয়্যিদ কুতুব (রহঃ) বললেন, এর বিনিময়ে কি আপনি বেতন পান? ইমাম বললেন, হ্যাঁ আমি সরকার থেকে বেতন- ভাতা পাই। তখন সাইয়্যিদ কুতুব (রহঃ) সেই ইমাম সাহেবকে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কি জানেন "কি কারণে আমাকে ফাঁসি দেয়া হচ্ছে?" ইমাম বললেন, বেশি কিছু জানি না।
সাইয়্যিদ কুতুব (রহঃ) বললেন, আপনি আমাকে যেই কালিমা পড়াতে এসেছেন, সেই কালিমার ব্যখ্যা লেখার কারণেই তো আমাকে ফাঁসি দেয়া হচ্ছে। কি আশ্চর্য! যেই কালিমা পড়ানোর কারণে আপনি বেতন-ভাতা পান সেই কালিমার ব্যাখ্যা মুসলিম উম্মাহকে জানানোর অপরাধেই আমাকেই ফাঁসি দেয়া হচ্ছে। সুতরাং বোঝা যাচ্ছে, আপনার কালিমার বুঝ আর আমার কালিমার বুঝ এক নয়। অতএব আপনার কোন প্রয়োজন নেই।




ইসলামী সমাজ বিপ্লবের ধারা (ইংরেজি: Milestones, মাইলস্টোনস, বাংলাঃ মাইলফলক) বইখানি মিশরের ইসলামী চিন্তাবিদ সাইয়েদ কুতুব এর লেখা বই মা'আলিম ফিত তারিক্ব (معالم فى الطريق) এর বাংলা অনুবাদ। এ গ্রন্থ রচনার অপরাধে ও মিশরের শাসক কে হত্যা ষড়যন্ত্রের দায়ে ১৯৬৬ সালের ২৫ শে আগস্ট আদালত তাকে মৃত্যুদন্ড দেয়।

এই সম্পর্কে একটি ওয়াজ লিংক: https://youtu.be/qbJmf_OGYA8

Post a Comment

0 Comments